Thursday, October 24, 2024

দিব্যযুগ আর ব্রহ্মার আয়ু (Age of Lord Brahma)

দিব্যযুগ আর ব্রহ্মার আয়ু (Age of Lord Brahma)

সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি- এই চার যুগের সময় একত্রিত করলে হয় 'যুগ' বা 'দিব্যযুগ'| এটি দেবতাদের যুগ, তাই একে 'দিব্যযুগ' বলা হয়| দেবতাদের সময়ের পরিমাণ আমাদের সময়ের পরিমাণের থেকে তিন শত ষাট গুণ বেশী মানা হয়| অর্থাৎ আমাদের এক বৎসর দেবতাদের চব্বিশ ঘন্টার এক দিন-রাত, আমাদের ত্রিশ বৎসর দেবতাদের এক মাস আর আমাদের তিন শত ষাট বৎসর তাঁদের এক দিব্য বৎসর হয়| একে 'মহাযুগ' ও 'চতুর্যুগী' ও বলা হয়| এই সংখ্যা যোগ করলে আমাদের ৪৩,২০,০০০ বৎসর হয়| দিব্য বর্ষের হিসাবে বারো শত দিব্য বর্ষ আমাদের কলিযুগ, চব্বিশ শততে দ্বাপর, ছত্রিশ শততে ত্রেতা এবং আটচল্লিশ শততে সত্যযুগ হয়, সব মিলিয়ে ১২০০০ বৎসর হয়| এই হল একটি দিব্যযুগ| এইরূপ হাজার দিব্যযুগে ব্রহ্মার একদিন হয় এবং ততটা যুগেই এক রাত্রি হয়| এটিকে অন্য ভাবে স্পষ্ট করা যাক| আমাদের যুগের সময় পরিমাণ এইরূপ---

কলিযুগ---   ৪,৩২০০০ বৎসর

দ্বাপরযুগ---  ৮,৬৪০০০ বৎসর (কলিযুগের দ্বিগুন)

ত্রেতাযুগ--- ১২,৯৬০০০ বৎসর (কলিযুগের তিনগুন)

সত্যযুগ---  ১৭,২৮০০০ বৎসর (কলিযুগের চতুর্গুণ)

মোট---      ৪৩,২০০০০ বৎসর

এই একটি 'দিব্যযুগ'| এইরূপ হাজার 'দিব্যযুগে' অর্থাৎ আমাদের ৪,৩২,০০,০০,০০০ (চার শত বত্রিশ কোটি) বর্ষে ব্রহ্মার একদিন হয় এবং এতটা বড়ো তাঁর রাত্রি হয়|

 মনুস্মৃতির প্রথম অধ্যায়ে চৌষট্টি থেকে তিয়াত্তরতম শ্লোক পর্যন্ত এই বিষয়ের বিশদ বর্ণনা আছে| ব্রহ্মার দিনকে 'কল্প' বা 'সর্গ' এবং রাত্রিকে 'প্রলয়' বলা হয়| এইরূপ তিরিশ দিন-রাত্রে ব্রহ্মার এক মাস, বারো মাসে এক বৎসর এবং শতবর্ষে ব্রহ্মার পূর্ণায়ু হয়|

এর থেকে বোঝা যায় ব্রহ্মার জীবন ও তাঁর লোকও সীমিত অর্থাৎ কালের দ্বারা সীমাবদ্ধ| তাই ব্রহ্মা অনিত্য হওয়ায় তাঁর অধীনস্ত লোক (আমরাও) অনিত্য হবে সেটা তো স্বাভাবিক|

No comments:

Post a Comment